জাকির সিকদারঃ বাংলাদেশের অবৈধ টিভি চ্যানেলের বিরুদ্ধে অভিযান জরুরী ।বাংলাদেশে বহুরুপী ভূয়া টিভি সম্প্রচার বন্ধ করা দরকার।বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত ২৪টি টিভি চ্যানেল ব্যতীত যত টিভি চ্যানেল রয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে সারাশি অভিযানের নির্দেশ দিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি পুলিশ বিভাগের করা একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নেয়। গত ২১ জুলাই ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর তথ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আখতারুজ্জামান তালুকদার স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে এ সারাশি অভিযানের কথা বলা হয়েছে। ডিএমপির মিডিয়া শাখার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কিছুদিন থেকে ঢাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সরকারের অনুমোদন না নিয়ে অবৈধ উপায়ে টিভি চ্যানেল পরিচালনা করে আসছে। এসব চ্যানেলের কাছ থেকে সরকার কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না। টিভি চ্যানেলের নাম করে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হবে মর্মে স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র/ছাত্রীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘এসব চ্যানেলের মাধ্যমে অপসংস্কৃতি ছড়ানোর প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। এছাড়া তাবিজ, হোমিও ওষুধ, মোটা ও চিকন হওয়ার ওষুধের বিজ্ঞাপন এবং অশ্লীল ছবি প্রদর্শন করা হচ্ছে। যা কেবল টিভি নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন-২০০৬ এর ধারা মতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তিনি আরো বলেন, ‘এসব অবৈধ টিভি চ্যানেলের লোগো মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসে লাগিয়ে কিছু লোক সাংবাদিক সেজে দিব্বি চলাফেরা করছে। অনেক সময় এদের কারণে পুলিশকে বিপাকে পড়তে হয়। ভূয়া সাংবাদিক আর আসল সাংবাদিকের মধ্যে কোনো পার্থক্য খুঁজে পায় না পুলিশ। এ অবস্থা চলতে থাকলে জঙ্গিবাদীরা এরকম টিভি চ্যানেল করে প্রেস লেখা স্টিকার গাড়িতে মেরে ঘুরে বেড়াবে। তাদের সনাক্ত করা খুবই কঠিন হবে। এখন হয়তো দু’একটা চ্যানেল আছে কিন্তু আগামীতে জামায়াত-শিবির এমন টিভি চ্যানেল তৈরি করতে পারে এবং নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কারণ, তাদের টাকা পয়সার অভাব নেই।’ অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বলেন, ‘এসব টিভি চ্যানেলের কারণে অনুমোদিত চ্যানেলগুলোর অনেক ক্ষতি হচ্ছে। সবকিছু মাথায় রেখে অবৈধ চ্যানেলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত ১৩ জুলাই তথ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়। সেই প্রেক্ষিতে তথ্য মন্ত্রণালয় অবৈধ টিভি চ্যানেগুলোর বিরুদ্ধে জরুরী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২১ জুলাই একটি চিঠি ইস্যু করে।’ প্রসঙ্গত, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে দেশে বৈধ টিভি চ্যানেলের সংখ্যা মোট ২৪টি। এগুলো হলো বিটিভি, এটিএন বাংলা, এটিএন নিউজ, চ্যানেল আই, বৈশাখী টিভি, আরটিভি, এনটিভি, বাংলাভিশন, একুশে টেলিভিশন, দেশ টিভি, মাই টিভি, মোহনা টিভি, ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন, একাত্তর টিভি, মাছরাঙা টিভি, সময় টিভি, জিটিভি, চ্যানেল-৯, চ্যানেল-২৪, এসএ টিভি, এশিয়ান টিভি, বিজয় টিভি, গান বাংলা টিভি এবং যমুনা টেলিভিশন। এই টিভি চ্যানেলগুলোর নাম চিঠিতে উল্লেখ করা হলেও সংসদ টিভি এবং সম্প্রচারে না আসা চ্যানেলগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে কিছু অবৈধ টিভি চ্যানেলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অবৈধ চ্যানেলগুলো হলো মুভি বাংলা টিভি, ফিল্মি বাংলা টিভি, বেঙ্গলি মুভি এসকে টিভি, চ্যানেল-৫, চ্যানেল-৭, ডিএম টিভি, বাংলা মিউজিক টিভি, এসবি টিভি, সিটিজি টিভি, আনন্দ বাংলা টিভি, এসকে টিভি, কিট্স টিভি, সিটিএন টিভি ও রাং টিভি।
বাংলাদেশে এখন ভূয়া টিভির ছড়াছড়ি।